সংসদীয় আসনের সীমানা পুনর্বিন্যাসের দাবিতে ফরিদপুরের ভাঙ্গায় টানা তৃতীয় দিনের মতো চলছে সড়ক ও রেল অবরোধ। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে ঢাকা-খুলনা, ঢাকা-বরিশাল ও ফরিদপুর-বরিশাল মহাসড়ক এবং ভাঙ্গা রেলস্টেশনে অবস্থান নেন বিক্ষুব্ধ স্থানীয়রা।
ফরিদপুর-৪ আসনের (ভাঙ্গা, সদরপুর ও চরভদ্রাসন) আওতাধীন আলগী ও হামিরদী ইউনিয়নকে ফরিদপুর-২ আসনে (নগরকান্দা ও সালথা) অন্তর্ভুক্ত করার প্রতিবাদে এ কর্মসূচি পালন করা হচ্ছে। ইউনিয়ন দুটি পুনরায় ভাঙ্গা উপজেলার সঙ্গে সংযুক্ত না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন তারা।
এসময় দুপুরে ঢাকা-ভাঙ্গা-খুলনা রুটের জোহান এক্সপ্রেস ট্রেন মুকসুদপুর এলাকায় আটকে যায়। সকাল থেকেই ভাঙ্গা-বরিশাল রুটের কৈডুবি এলাকায় রেললাইন অবরোধ করে ট্রেন চলাচল বন্ধ করে দেন আন্দোলনকারীরা। বিষয়টি নিশ্চিত করেন ভাঙ্গা রেলস্টেশনের মাস্টার আবু জাফর।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ভোর থেকে ভাঙ্গার বিভিন্ন স্থানে—ভাঙ্গা বাসস্ট্যান্ড, মুনসুরাবাদ, সুয়াদী পাম্প, পুখুরিয়া ও হামিরদী বাসস্ট্যান্ড এলাকায় টায়ার জ্বালিয়ে, গাছের গুড়ি ফেলে অবরোধ ও বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়।
অবরোধে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন যাত্রীরা। বরিশালের দিনমজুর সাত্তার পাটোয়ারী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “ফরিদপুর পর্যন্ত বেশি ভাড়া দিয়েও ভাঙ্গায় নামতে পারিনি। মাঝপথে নামিয়ে দিয়েছে, কিন্তু পুরো ভাড়াই নিয়েছে। এখন বাড়ি ফিরতে পারব কি না জানি না।”
আন্দোলনকারীরা অভিযোগ করেন, এর আগে পুলিশ ও প্রশাসনের পক্ষ থেকে দাবি বাস্তবায়নে তিনদিন সময় নেয়া হয়েছিল। কিন্তু কোন সমাধান না হওয়ায় আবারও আন্দোলনে নামতে বাধ্য হয়েছেন তারা।
এদিকে আন্দোলনে একাত্মতা প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস। সংগঠনের ফরিদপুর জেলা শাখার সহ-সভাপতি ও ফরিদপুর-৪ আসনের সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী মাওলানা মিজানুর রহমান মোল্লার পক্ষ থেকে আন্দোলনকারীদের মাঝে বিশুদ্ধ পানি ও খিচুড়ি বিতরণ করা হয়। উপস্থিত ছিলেন খেলাফত মজলিস ভাঙ্গা উপজেলা সভাপতি হাফিজুর রহমান ও মাওলানা সাংবাদিক শহীদুল ইসলাম।
খিচুড়ি খাওয়ার আমেজে কেউ খাবার হাতে, কেউ আবার স্লোগানে মুখর করে তোলেন আন্দোলনস্থল।