ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার চান্দ্রা ইউনিয়নের মালিগ্রাম থেকে কালামৃধা রোডের পূর্ব পাশে মাদ্রাসার সামনের মাঠে শুক্রবার (২৯ আগস্ট) বিকেলে উৎসবমুখর পরিবেশে অনুষ্ঠিত হলো রশিদপুরা স্পোর্টিং ক্লাব আয়োজিত প্রতীক্ষিত টুর্নামেন্ট–২০২৫।
মাঠের চারপাশে হাজারো দর্শকের উপস্থিতি, করতালি, স্লোগান ও উল্লাসে পরিবেশ পরিণত হয়েছিল মেলার আমেজে। এলাকার মানুষজন বলেন, “এত সুন্দর খেলা গত ১৫–১৬ বছরে আর দেখা যায়নি।”
এই টুর্নামেন্টের বিশেষ বৈশিষ্ট্য ছিল খেলোয়াড়দের বয়স। দুই দলের খেলোয়াড়দের বয়স ছিল ৫০ থেকে ৮০ বছরের মধ্যে। বয়সী খেলোয়াড়দের এমন দৌড়ঝাঁপ, পায়ে বল কিক আর দর্শকদের মাতিয়ে তোলার দৃশ্য দেখে অনেকেই বলছিলেন—
“মনে হচ্ছিল আবাহনী-মোহামেডান খেলা দেখছি।”
খেলা চলাকালীন মাঠের চারপাশে এত মানুষের সমাগম হয়েছিল যে বড় ফুটবল ম্যাচের চেয়েও বেশি দর্শক উপস্থিত ছিল।
প্রতিযোগিতার ফাইনালে মুখোমুখি হয় ঘারুয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মনসুর মুন্সির দল ও ক্যাপ্টেন আজিজুল মাতুব্বরের দল।
শুরু থেকেই দুই দলের খেলোয়াড়রা চমৎকার কৌশলে খেলতে থাকেন। আক্রমণ-প্রতিআক্রমণ আর দর্শকদের করতালি মাঠকে উত্তপ্ত করে তোলে। শেষ পর্যন্ত রোমাঞ্চকর খেলায় মনসুর মুন্সির দল ৩ গোল দিয়ে ৩–২ ব্যবধানে আজিজুল মাতুব্বরের দলকে পরাজিত করে শিরোপা জিতে নেয়।
দর্শকরা উচ্ছ্বসিত হয়ে জানান, “মনসুর মুন্সির দল আজ সত্যিই অসাধারণ খেলেছে। শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত তারা লড়াই করে ৩ গোল দিয়ে বিজয় নিশ্চিত করেছে।”
খেলা শেষে অনুষ্ঠিত হয় পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান ও এক মিলনমেলা। বিজয়ী দলকে বড় আকৃতির কাপ এবং রানারআপ দলকে ছোট কাপ প্রদান করা হয়। পাশাপাশি প্রতিটি খেলোয়াড়কে মেডেল ও বিশেষ পুরস্কার দেওয়া হয়। শুধু তাই নয়, উপস্থিত সাধারণ মানুষদের মাঝেও উপহার বিতরণ করা হয়, যা অনুষ্ঠানকে আরও আনন্দঘন করে তোলে।
অনুষ্ঠান শেষে দর্শকরা জানান, এ ধরনের আয়োজন তরুণ প্রজন্মকে খেলাধুলার প্রতি আগ্রহী করে তুলবে। তারা মাদক ও অপসংস্কৃতি থেকে দূরে থেকে ক্রীড়ার মাধ্যমে নিজেদেরকে গড়ে তুলতে পারবে।
অনুষ্ঠানে এলাকার জনপ্রিয় ব্যক্তিবর্গ ও সমাজের বিশিষ্টজনরা উপস্থিত থেকে খেলোয়াড়দের উৎসাহিত করেন। তারা বলেন—
“ফুটবল এক সময় এ অঞ্চলে জনপ্রিয় খেলা ছিল। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এর কদর কমে গিয়েছিল। কিন্তু আজকের এই আয়োজন সেই হারানো দিনের আবহ ফিরিয়ে এনেছে।”
অতিথিরা রশিদপুরা স্পোর্টিং ক্লাবকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, নিয়মিত এ ধরনের টুর্নামেন্ট আয়োজন করা হলে আগামী প্রজন্মও খেলাধুলার প্রতি আকৃষ্ট হবে এবং সমাজে নতুন প্রাণচাঞ্চল্য ফিরে আসবে।