ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার চান্দ্রা বাজারে অবস্থিত আল আরাফাহ ইসলামী ব্যাংক লিমিটেডের এজেন্ট শাখায় বড় ধরনের অনিয়ম ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় গ্রাহকদের ক্ষোভে শাখা ম্যানেজার স্থানীয় জনতা ও ভুক্তভোগীদের হাতে অবরুদ্ধ রয়েছেন।
ঘটনাটি ঘটে গত ১৭ আগস্ট (রবিবার) সকালে। ওইদিন একাধিক গ্রাহক ব্যাংকের শাখায় টাকা তুলতে এসে দেখতে পান, তাদের জমা রাখা টাকার কোনো হদিস নেই। এমন পরিস্থিতিতে ব্যাংক ব্যবস্থাপনার প্রতি ক্ষুব্ধ হয়ে পড়েন গ্রাহকরা। খবরটি এলাকায় দ্রুত ছড়িয়ে পড়লে বিকেলে স্থানীয় জনতা শাখা কার্যালয়ে গিয়ে ম্যানেজারকে আটক করেন।
ঘটনার পর থেকে সোমবার (১৮ আগস্ট) সন্ধ্যা পর্যন্ত শাখা ম্যানেজার অবরুদ্ধ রয়েছেন। স্থানীয়রা জানায়, অফিসের গেট বাইরে থেকে তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে এবং ম্যানেজারকে বের হতে দেওয়া ভাত খেয়েছ হচ্ছে না। তিনি গ্রাহকদের আশ্বস্ত করেছেন যে, আত্মসাৎ করা টাকাগুলো ফেরত দেবেন। তবে এ ঘটনায় এখনো কোনো টাকা উদ্ধার হয়নি।
স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ, ভুক্তভোগী গ্রাহকরা এবং ম্যানেজারের শ্বশুরসহ কয়েকজন আত্মীয়-স্বজন বর্তমানে ব্যাংকের ভেতরে বসে আলোচনায় অংশ নিচ্ছেন। সাংবাদিকরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে দরজা খোলার অনুরোধ জানালেও ভেতরে থাকা ব্যক্তিরা অনুমতি দেননি।
ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করে বলেন—
ম্যানেজার পরিকল্পিতভাবে গ্রাহকদের টাকা আত্মসাৎ করেছেন। যদি তাকে আটক না করা হতো, তবে হয়তো টাকাগুলো নিয়ে বিদেশে পালিয়ে যেত।”
তাদের দাবি, প্রায় কোটি টাকার কোনো হদিস নেই। ফলে বর্তমানে এলাকায় তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। গ্রাহকদের মধ্যে আতঙ্ক ও হতাশা বিরাজ করছে।
এ ঘটনার কারণে চান্দ্রা বাজার এলাকায় ব্যাপক উত্তেজনা বিরাজ করছে। শত শত গ্রাহক টাকা ফেরতের দাবিতে ব্যাংকের সামনে অবস্থান করছেন। অনেকেই জীবনের সঞ্চয় হারিয়ে হতাশায় ভুগছেন।
এখনও পর্যন্ত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পক্ষ থেকে কোনো আনুষ্ঠানিক ব্যবস্থা নেওয়ার খবর পাওয়া যায়নি। তবে স্থানীয়রা জানিয়েছেন, বিষয়টি প্রশাসনের নজরে আনা হবে।
এদিকে, ব্যাংকের এই এজেন্ট শাখায় গ্রাহকদের দীর্ঘদিনের আস্থা এক ধাক্কায় নষ্ট হয়ে গেছে। জনমনে প্রশ্ন উঠেছে—অর্থনৈতিক খাতের নিরাপত্তা ও গ্রাহকদের আমানতের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে কর্তৃপক্ষ কি পদক্ষেপ নেবে?