ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলায় পূর্ব বিরোধের জেরে ৮০ বছর বয়সী এক বৃদ্ধকে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে পিটিয়ে গুরুতর আহত করার অভিযোগ উঠেছে। আহত আশরাফ আলী মাতুব্বর বর্তমানে ভাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ৬ আগস্ট ২০২৫, বিকেল ৩টার দিকে ভাঙ্গা উপজেলার রায়নগর এলাকার মোড়লবাড়ি সংলগ্ন রাস্তায় এ হামলার ঘটনা ঘটে।
আহতের ছেলে সুরুজ মাতুব্বর ভাঙ্গা থানায় দায়ের করা এজাহারে উল্লেখ করেন, তার পিতা শরীয়ারহাট বাজার থেকে ফেরার পথে ওঁৎ পেতে থাকা একই এলাকার তৈয়ব হাওলাদার (৪৫), আনোয়ার হাওলাদার (৪২), আলমগীর হাওলাদার (৩৫), আবুল বাশার মাতুব্বর (৩৫), আশরাফুল হাওলাদার (৩২) সহ আরও ৪-৫ জন অতর্কিত হামলা চালায়।
এজাহারে আরও বলা হয়েছে, হামলাকারীরা লোহার রড, হাতুড়ি, রামদা, এসএস পাইপ ও বাঁশের লাঠি ব্যবহার করে আশরাফ আলীকে এলোপাতাড়ি মারধর করে। এতে তাঁর ডান পা ও হাঁটুর নিচে মারাত্মক জখম হয় এবং ধারালো অস্ত্রের কোপে পায়ে রক্তক্ষরণ হয়। এ সময় তার পকেটে থাকা নগদ ৮০ হাজার টাকা এবং একটি স্যামসাং অ্যান্ড্রয়েড ফোন ছিনিয়ে নেওয়া হয়।
জমি নিয়ে দীর্ঘদিনের বিরোধ
স্থানীয় ইনসান মাতুব্বর বলেন, “এই জমির মালিক আগে আমি ছিলাম। পরে আমি আমার চাচা আশরাফ মাতুব্বরকে দলিল করে দিয়েছি। কিন্তু আক্কাস মাতুব্বর ও তার লোকজন মৌখিকভাবে দাবি করে, আমি নাকি তাদের দিয়েছি। তারা জোরপূর্বক জায়গা দখল করে রেখেছে।”
রানী আক্তার বলেন, “আমি ইনসান মাতুব্বরের কাছ থেকে এই জমি ক্রয় করেছি। কিন্তু আক্কাস মাতুব্বর আমাদের কেনা জমি দখল করে রেখেছে। আমরা জমিতে ধানের বীজ ফেলতে গেলে আমার দেওর বাধা দিলে তাকেও আগে মারধর করে। এবার আমার শ্বশুর আশরাফ মাতুব্বরকে মারধর করেছে।”
প্রত্যক্ষদর্শীর বর্ণনা ও পাল্টা মতামত
প্রত্যক্ষদর্শী সহিতন বেগম ও শাহ-চান মুন্সী জানান, “আমরা সামনে থেকেই দেখেছি কিভাবে আশরাফ মাতুব্বরকে পেটানো হয়েছে। হামলাকারীরা দেশীয় অস্ত্র দিয়ে তাকে আঘাত করে।”
অন্যদিকে অভিযুক্ত পক্ষের সিরিয়া বেগম (৬৫) বলেন, “আশরাফ মাতুব্বরকে আমাদের কেউ মারধর করেনি। সে কেন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে, তা আমরা জানি না।” এ বিষয়ে বক্তব্য চাইলে তিনি বলেন, “আমরা কোনো মন্তব্য করবো না।”
এছাড়া, আক্কাস মাতুব্বর ও তার ছেলেদের এ বিষয়ে খুঁজে পাওয়া যায়নি।
থানার বক্তব্য
এ বিষয়ে ভাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আশরাফ হোসেন বলেন, “আমরা অভিযোগ পেয়েছি। ঘটনাটি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।