মাদারীপুর জেলার শিবচর উপজেলার উৎরাইল হাট এক সময় ছিল একটি প্রাণবন্ত বাণিজ্যিক কেন্দ্র। বিশেষ করে অবৈধ সুন্দরী কাঠসহ বিভিন্ন মূল্যবান কাঠের জমজমাট বেচাকেনার জন্য এই হাট ছিল বিখ্যাত। নানা সময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানে এখান থেকে উদ্ধার হতো বিপুল পরিমাণ অবৈধ কাঠ।
শুধু কাঠ নয়, এই হাটে বিক্রি হতো গরু, ছাগল, মসুর ডাল, কলই, পাট, রসুন, পেঁয়াজসহ বিভিন্ন কৃষিপণ্য। এলাকার কৃষক ও ব্যবসায়ীদের জন্য এই হাট ছিল অর্থনীতির বড় চালিকা শক্তি।
তবে সময় বদলেছে। নদীভাঙনের নির্মম থাবায় উৎরাইল হাট এখন শুধুই স্মৃতি। যে জায়গাটিতে একসময় হাট বসতো, এখন সেখানে বিস্তীর্ণ চর। চরজুড়ে কাশবন গজিয়ে উঠেছে, মাঝ দিয়ে বয়ে চলেছে একটি বড় নদী। আগের সেই জমজমাট হাটের চিহ্ন আর খুঁজে পাওয়া যায় না।
বর্তমানে রাস্তার পাশে অস্থায়ীভাবে নতুন একটি হাট গড়ে উঠেছে, কিন্তু সেই পুরনো উতরাইল হাটের গন্ধ, কোলাহল আর বৈচিত্র্য তাতে নেই। আগে এই হাটে ‘সুন্দরী কাঠ’, ‘মেহগনি কাঠ’, ‘তাল কাঠ’, ‘কড়িকাঠ’সহ নানা নামে কাঠ বিক্রির কার্ড দেখা যেত, এখন তা বিলুপ্ত প্রায়। খুব অল্প পরিমাণ কাঠ বাজারে পাওয়া গেলেও তাতে বেচাকেনা হয় না বললেই চলে।
বর্তমান সময়ে মানুষ ঘর নির্মাণে কাঠের পরিবর্তে ইট, সিমেন্ট ও রড ব্যবহার করছেন। ফলে কাঠের চাহিদা কমে গেছে, এবং কাঠ ব্যবসাও অনেকটা অস্তিত্ব সংকটে পড়েছে।
উৎরাইল হাট আজ ইতিহাসের অংশ হলেও, এই হাট ঘিরে গড়ে ওঠা বাণিজ্যিক ও সামাজিক জীবনের স্মৃতি এখনো স্থানীয়দের হৃদয়ে জেগে আছে।