ভাঙ্গা থেকে ছানোয়ার হোসেন:
ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার কালামৃধা ইউনিয়নের দেওড়া বাজার এলাকায় অবস্থিত কচি-কাঁচা কিন্ডার গার্টেন স্কুলের
উদ্যোগে শান্তিপূর্ণ পরিবেশে বাংলা শুভ নববর্ষ পালিত হয়েছে।
দিবসটি উপলক্ষে কচি-কাঁচা কিন্ডার গার্টেন স্কুলের মাঠে
পান্তা ভাতে ইলিশ মাছ ও বিভিন্ন ধরনের ভর্তা দিয়ে ভাত খাওয়ার তৃপ্তি আনন্দ উৎসবের আয়োজন করে কচি-কাঁচা কিন্ডার গার্টেন স্কুলের শিক্ষক ও শিক্ষিকা।
বাংলা নববর্ষ বা পহেলা বৈশাখ বাংলাদেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ উৎসব। নববর্ষ মানেই নতুন বছরের নতুন সকাল, নতুন কল্পনা, সংস্কৃতি আর ঐতিহ্যের সুবাস। এ দিনটি সাধারণত ইংরেজি এপ্রিল মাসের ১৪ তারিখে উদযাপিত হয়। পহেলা বৈশাখের আনন্দে সবাই নতুন জামাকাপড়ে সেজে ওঠে। ‘এসো হে বৈশাখ’ গানের সুরে মুখোরিত হয় গোটা দেশ। এছাড়াও এ দিনে বাঙালির প্রাণের স্পন্দন হয়ে ওঠে এক বিশেষ খাবার — পান্তা-ইলিশ। এ খাবারটি শুধু বাংলার খাদ্য সংস্কৃতির একটি অংশ নয়, বরং এটি নববর্ষের আবহে এক বিশেষ অনুভূতি তৈরি করে। তাই পান্তা-ইলিশ শুধু একটি খাবার নয়, বাঙালির সংস্কৃতির এক অবিচ্ছেদ্য অংশ, এক অনন্য আবেগ।
পান্তা ভাতের সূচনা মূলত কৃষিভিত্তিক সমাজে, যেখানে চাষিরা রাতের অবশিষ্ট ভাত পানিতে ভিজিয়ে রেখে সকালে তা খেতেন পেঁয়াজ, কাঁচামরিচ, লবণ আর কিছু শাকপাতার সঙ্গে। একদিকে এটি যেমন ছিল সহজলভ্য ও হজমে সহায়ক, অন্যদিকে ছিল চাষির পরিশ্রমী জীবনের প্রতীক।
নববর্ষে এই সাধারণ খাবারই পরিণত হয় এক উৎসবের উপকরণে, যেখানে ইলিশ মাছ যুক্ত হয়ে যায় তার পাশে। ইলিশের স্বাদ, গন্ধ ও গৌরব সাদামাটা পান্তাকে করে তোলে রাজকীয়।
আধুনিক নগরজীবনে নববর্ষ মানেই চারুকলার আনন্দ শোভাযাত্রা, পহেলা বৈশাখের পোশাক আর পান্তা-ইলিশ খাওয়ার মিলনমেলা বইছে, কচি-কাঁচা কিন্ডার গার্টেন স্কুলের
মাঠে। এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। মোঃ রুবেল মাতব্বর,
শেখ শাহাবুদ্দিন, হাবিজুল বেপারী, ডা:যাদব মন্ডল, শিক্ষক প্রশান্ত সরকার, শিক্ষক সাগর মন্ডল, শিক্ষিকা বিলকিস, খালেদা,পান্না, সাংবাদিক মাহাবুদুল হক বাহার,
মানবাধিকার উপ-পরিচালক মোঃ ছানোয়ার মাতুব্বর প্রমূখ।
পহেলা বৈশাখের পান্তা-ইলিশ
ঐতিহ্য শুধু একটি খাবার নয়, এটি বাংলার সংস্কৃতি, পারিবারিক বন্ধন, এবং আঞ্চলিক ঐতিহ্যের এক গৌরবময় প্রতীক। প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে এই ঐতিহ্য চলে আসছে এবং আজও এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হয়ে রয়েছে বাংলা নববর্ষের শুভলগ্নে।
পান্তা-ইলিশে হোক বাংলা নববর্ষের সূচনা, বেঁচে থাক সংস্কৃতির গৌরব, চলুক ঐতিহ্যের জয়গান।