স্টাফ রিপোর্টার: ফরিদপুরের ভাঙ্গায় সরোয়ার মুন্সি নামে এক বৃদ্ধের মৃত্যুকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দিয়ে হয়রানির অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনার প্রতিবাদে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেছেন এলাকাবাসী। তাঁদের দাবি, সরোয়ার মুন্সি হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেলেও মিথ্যা মামলা দিয়ে নিরীহ মানুষদের ফাঁসানো হয়েছে।
আজ শুক্রবার বিকেল ৪টার দিকে ভাঙ্গা উপজেলার ঘারুয়া ইউনিয়নের হিরালদী গ্রামের আঞ্চলিক সড়কে স্থানীয়রা মানববন্ধন করেন। এতে দেড়শতাধিক নারী-পুরুষসহ ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা অংশ নেন।
জানা গেছে, গত বছরের নভেম্বরে পাশ্ববর্তী সাউতিকান্দা গ্রামের ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মাতুব্বরের কাছ থেকে পেঁয়াজবীজ কিনেছিলেন হিরালদী গ্রামের কৃষকেরা। ক্রয়কৃত বীজ অঙ্কুরিত না হওয়ায় ক্ষতিপূরণ চাইলে গত ১২ ডিসেম্বর সকালে মোস্তফা মাতুব্বরের নেতৃত্বে কৃষকদের ওপর হামলা চালানো হয়। এতে অন্তত ১০ জন কৃষক আহত হন। আহতদের মধ্যে চারজনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল।
মানববন্ধনে স্থানীয় মিজানুর রহমান জানান, কৃষকদের ওপর হামলার ঘটনায় প্রতিবাদ করতে গেলে সরোয়ার মুন্সি সামান্য আহত হন। পরে তিনি হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে যান। কিন্তু ১৯ ডিসেম্বর তিনি হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। অথচ মোস্তফা মাতুব্বর ও তার সহযোগীরা এই স্বাভাবিক মৃত্যুকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করে মিথ্যা হত্যা মামলা দায়ের করেন।
ভাঙ্গা থানায় আওলাদ শেখ বাদী হয়ে ১৫ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলায় নিরীহ মানুষদের নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন মিজানুর রহমান। মামলার আসামিদের মধ্যে রয়েছেন ফরিদুজ্জামান লাবলু ও তার বৃদ্ধ বাবা হাজী আব্দুল সালাম। মানববন্ধনে লাবলুর স্ত্রী সম্পা বেগম বলেন, “আমার স্বামী ও অসুস্থ শ্বশুরকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হয়েছে। আমার শ্বশুর চলাফেরা করতে পারেন না, এমন একজন কীভাবে হামলায় জড়িত হতে পারেন?” তিনি আরও জানান, মামলা তুলে নেওয়ার জন্য তাদের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা দাবি করা হচ্ছে এবং কয়েকবার চাঁদা আদায়ও করা হয়েছে।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, মামলা দায়েরের পর থেকে গ্রামের নারী ও শিশুরা চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। মোস্তফা মাতুব্বরের লোকজন গ্রামবাসীদের ওপর নির্যাতন বাড়িয়ে দিয়েছে। তাদের ভয়ে স্কুলপড়ুয়া শিশুরা বিদ্যালয়ে যেতে পারছে না এবং সাধারণ মানুষ হাটবাজারে যেতেও ভয় পাচ্ছে। মানববন্ধনে উপস্থিত শত শত নারী-পুরুষ এ ঘটনার প্রতিকার চেয়ে সরকারের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
এ বিষয়ে বাদী আওলাদ মাতুব্বর বলেন, “মৃত সরোয়ার মুন্সি আমাদের দলের লোক ছিলেন। আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ আনা হচ্ছে।”
ভাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আশরাফ হোসেন বলেন, “হত্যা মামলাটি তদন্তাধীন রয়েছে। তদন্ত শেষে প্রকৃত ঘটনা জানা যাবে।